
ভাবুন একবার—আপনার প্রিয় ফায়ারফক্স ব্রাউজারটি একদিন হঠাৎ করে আর চালুই হলো না।
না, এটা কোনো প্রযুক্তি বিভ্রাট নয়। বরং এক বড় আইনি যুদ্ধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
মজিলা, ফায়ারফক্সের নির্মাতা ও এক সময়কার স্বাধীন ওয়েবের প্রতীক, সম্প্রতি এক চমকে দেওয়ার মতো ঘোষণা দিয়েছে:
“গুগল যদি এই অ্যান্টিট্রাস্ট মামলায় হেরে যায়, তাহলে হয়তো আমাদের টিকে থাকাই সম্ভব হবে না।”
মার্কিন সরকার চায় গুগলের একচেটিয়া আধিপত্য ভেঙে দিতে। তারা এমনও ভাবছে—গুগলকে বাধ্য করবে Chrome ব্রাউজার বিক্রি করে দিতে।
সেই কড়া লড়াইয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে নিরীহ ফায়ারফক্স।
কারণ?
গুগলই মজিলাকে প্রতিবছর শত শত মিলিয়ন ডলার দেয়, যেন গুগল থাকে ফায়ারফক্সের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন।
এবং মজিলার মোট আয়ের ৮৫% আসে এই একটি চুক্তি থেকেই!
“যদি সেই অর্থ না পাই, আমাদের প্রকল্পগুলো বন্ধ করতে হবে, ইঞ্জিনিয়ার কমাতে হবে, আর ফায়ারফক্সের ভবিষ্যৎ হয়ে পড়বে অনিশ্চিত।”
— এরিক মুলহাইম, সিএফও, মজিলা
আপনি হয়তো ভাবছেন—একটা ব্রাউজার বন্ধ হলে কী হবে?
কিন্তু ফায়ারফক্স শুধু একটা ব্রাউজার নয়।
এটাই একমাত্র ব্রাউজার যা চলে নিজস্ব ইঞ্জিন Gecko-তে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার: এটা কোনো বড় টেক জায়ান্টের মালিকানায় নেই।
ক্রোম? গুগলের।
সাফারি? অ্যাপলের।
এজ? মাইক্রোসফটের।
আর সবকটাই চলে Chromium ইঞ্জিনে।
ফায়ারফক্স চলে নিজের ইঞ্জিনে, নিজের নীতিতে।
এটাই আমাদের শেষ স্বাধীন বিকল্প।
“অনেক শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন থাকলে কি ভালো হতো?”
“নিশ্চয়ই। কিন্তু সেই দিন এখনো আসেনি। আর তার আগেই যদি গুগল-মজিলা সম্পর্ক ভেঙে যায়, ফায়ারফক্স টিকবে না।”
মজিলা বলে দিচ্ছে—এই যুদ্ধ শুধু গুগলের বিরুদ্ধে না। এটা স্বাধীন ওয়েবের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।
গুগল না থাকলে হয়তো ফায়ারফক্সও থাকবে না। আর ফায়ারফক্স না থাকলে? আমাদের থাকবে না কোনো বাস্তব বিকল্প।
আপনি কি এমন ইন্টারনেট চান, যেখানে সব দরজা খুলে থাকে—নাকি কেবল একচেটিয়ার তৈরি করিডোরে হাঁটবেন?
ভেবে দেখুন। সময় থাকতে সজাগ হোন।