
Samsung-এর জনপ্রিয় A-সিরিজ এবং S-সিরিজের মধ্যে বাজেট ও পারফরম্যান্সের দিক দিয়ে মাঝামাঝি অবস্থানে থাকা দুটি স্মার্টফোন হলো Galaxy A56 ও Galaxy S24 FE। দাম প্রায় কাছাকাছি হলেও, ফিচার ও পারফরম্যান্সে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পার্থক্য। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কোনটি আপনার জন্য সেরা হবে।
দুটি ফোনই 6.7 ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে নিয়ে এসেছে এবং আকারে প্রায় একই রকম হলেও Galaxy A56 কিছুটা হালকা (198g) ও পাতলা (7.4mm)। এর মেটাল ফ্রেম ও ব্রাশড ফিনিশ অনেকেই বেশি স্টাইলিশ মনে করতে পারেন।
অন্যদিকে, Galaxy S24 FE একটু ভারী (213g) ও মোটা হলেও এটি IP68 ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স রেটিংসহ আসে, যা ১.৫ মিটার পানিতে টিকতে পারে — দুর্দান্ত একটি প্রিমিয়াম ফিচার।
উভয় ফোনেই রয়েছে 6.7" OLED 120Hz ডিসপ্লে। তবে S24 FE-এর সর্বোচ্চ ব্রাইটনেস একটু বেশি (1372 nits) যা রোদে বাইরে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সুবিধা দেয়। তবে সাধারণ ব্যবহারে পার্থক্য খুব বেশি টের পাওয়া যায় না।
Galaxy A56-এ রয়েছে ৫০০০mAh ব্যাটারি, যেখানে S24 FE-তে আছে ৪৭০০mAh। ওয়েব ব্রাউজিং বা ভিডিও দেখা বেশি করলে A56 কিছুটা বেশি সময় ব্যাকআপ দেয়। তবে গেমিংয়ের ক্ষেত্রে S24 FE বেশি কার্যকর।
চার্জিং স্পিডের দিক দিয়ে A56-এ রয়েছে ৪৫W ফাস্ট চার্জিং, যা ৩০ মিনিটে প্রায় ৬৫% চার্জ দিতে পারে। কিন্তু S24 FE-তে রয়েছে ২৫W চার্জিং — একটু ধীর হলেও এতে ওয়্যারলেস চার্জিং ও রিভার্স চার্জিং সাপোর্ট করে, যা একটি বিরল ও দরকারি সুবিধা।
উভয় ফোনেই রয়েছে স্টেরিও স্পিকার। তবে S24 FE একটু বেশি লাউড (Very Good -26.2 LUFS)। যদি আপনি মুভি দেখা বা মিউজিক শোনায় আগ্রহী হন, তাহলে এই দিক দিয়ে S24 FE এগিয়ে।
Galaxy A56 এসেছে Exynos 1580 চিপসেট নিয়ে, যেখানে S24 FE-তে রয়েছে শক্তিশালী Exynos 2400e চিপ। AnTuTu ও Geekbench স্কোরে S24 FE অনেক এগিয়ে, বিশেষ করে গেমিং ও মাল্টিটাস্কিং-এর ক্ষেত্রে।
S24 FE-এর বেস মডেলেই ৮GB RAM, যেখানে A56 শুরু হয় ৬GB থেকে। ফলে যারা হেভি ইউজার, তাদের জন্য S24 FE নিঃসন্দেহে ভালো পছন্দ।
দুটি ফোনেই আছে ৫০MP মেইন ক্যামেরা ও ১২MP আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর। তবে S24 FE-তে আছে বাড়তি ৮MP টেলিফটো লেন্স (৩x অপটিক্যাল জুম), যা A56-এ অনুপস্থিত। ফলে পোর্ট্রেট বা দূরের ছবি তোলায় S24 FE আরও কার্যকর।
সেলফি ক্যামেরার ক্ষেত্রে A56-এ ১২MP, যেখানে S24 FE-তে ১০MP। উভয়েরই সেলফি ভালো, তবে A56-এ রঙ কিছুটা বেশি প্রাণবন্ত মনে হতে পারে।
দুই ফোনই 4K ভিডিও সাপোর্ট করে। মূল ক্যামেরায় দুটির ভিডিও কোয়ালিটি বেশ ভালো। তবে S24 FE-এর টেলিফটো লেন্স থাকায় ভিডিওতে আরও ভ্যারাইটি আনা যায়।
Galaxy A56 এসেছে Android 15 দিয়ে এবং এতে রয়েছে ৬ বছরের OS ও সিকিউরিটি আপডেট গ্যারান্টি। অন্যদিকে S24 FE শুরু হয়েছে Android 14 দিয়ে, তবে এতে ৭ বছরের আপডেট সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে — যা আজকের স্মার্টফোন দুনিয়ায় বিরল।
যদিও S24 FE তুলনামূলকভাবে একটু দামি, তবে আপনি যদি ফ্ল্যাগশিপ ধাঁচের পারফরম্যান্স, ওয়্যারলেস চার্জিং, এবং টেলিফটো ক্যামেরা চান — তাহলে S24 FE হবে আপনার জন্য পারফেক্ট পছন্দ।
অন্যদিকে, যারা বাজেট সচেতন এবং ভালো ব্যাটারি, সুন্দর ডিজাইন, ও ভালো ক্যামেরা চান — তারা Galaxy A56-কে অনায়াসে বেছে নিতে পারেন।
দাম ও প্রয়োজন বিবেচনা করে Galaxy A56 ও S24 FE — দুটি ফোনই যথেষ্ট শক্তিশালী ও আকর্ষণীয়। আপনি যদি ভবিষ্যৎ আপগ্রেড এবং ভারী ব্যবহারের কথা চিন্তা করেন, তাহলে S24 FE আপনার জন্য সেরা। আর যদি আপনি কিছুটা টাকা বাঁচিয়ে ভালো ডিজাইন ও ব্যাটারি চান, তবে A56 আপনার স্মার্ট চয়েস।